মোংলায় ফাদার মারিনো রিগনের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
মোংলায় নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে ফাদার মারিনো রিগনের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। আজ বুধবার ছিল তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী।
Try Adsterra Earnings, it’s 100% Authentic to make money more and more.
মারিনো রিগনের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শোভাযাত্রা করে ফাদার রিগনের সমাধিতে গিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, আলোচনা সভা, শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সেন্ট পলস উচ্চ বিদ্যালয়, ফাদার মারিনো রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যৌথভাবে মৃত্যুবার্ষিকীর নানা কর্মসূচি পালনের আয়োজন করে।
আজ সকাল সাড়ে ৯টায় শোভাযাত্রা সহকারে ফাদার মারিনো রিগনের সমাধিতে গিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার, মোংলা সরকারি কলেজ, ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সেন্ট পলস উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন।
এরপর সকাল ১০টায় মোংলার সেন্ট পলস বিদ্যালয়ের হলরুমে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস। আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান, ইউএনও কমলেশ মজুমদার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাংবাদিক মো. নূর আলম শেখ, সেন্ট পলস ধর্মপল্লীর পালক পুরোহিত দানিয়েল মণ্ডল, উপাধ্যক্ষ বিভাষ চন্দ্র বিশ্বাস ও সেন্ট পলস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ব্রাদার এন্ড্রু জয়ন্ত কস্তা।
সভায় বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ অবদান রাখার পাশাপাশি ফাদার রিগন বাংলার সাংস্কৃতিক সম্পদকে বহির্বিশ্বে তুলে ধরেছেন। তিনি ধর্মজীবন ও শিল্পজীবনকে পৃথকভাবে দেখেননি। তাঁর মস্তকে ছিল রবীন্দ্রনাথ আর অন্তরে ছিল লালন। বাংলাদেশে শিক্ষা-সংস্কৃতি ও মনুষ্যত্ব বিকাশে অনন্য ভূমিকা পালন করেছেন ফাদার মারিনো রিগন।
মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু, শিক্ষানুরাগী, অনুবাদক, কবি ও সাহিত্যিক ফাদার মারিনো রিগন ১৯২৫ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি ইতালির ভিল্লাভের্লা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
মোংলার শেহলাবুনিয়ায় থাকার সময় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় জন্মস্থান ইতালিতে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর ফাদার মারিনো রিগনের মৃত্যু হয়। কিন্তু তাঁর অন্তিম ইচ্ছানুযায়ী ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর ফাদার রিগনের মরদেহ ইতালি থেকে এনে মোংলার শেহলাবুনিয়ায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।
ফাদার রিগন ইতালি নাগরিক হলেও বাংলাদেশ সরকার ২০০৮ সালে তাকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব প্রদান করে। এ ছাড়া ২০১২ সালে মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য তাঁকে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা প্রদান করা হয়। লালনের সাড়ে তিনশ গান, গীতাঞ্জলিসহ রবীন্দ্রনাথের ৪৮টি বই এবং কবি জসিম উদ্দিনের নকশী কাঁথার মাঠ, নির্বাচিত কবিতা, সুজন বাদিয়ার ঘাট ইতালীয় ভাষায় অনুবাদ করে বাংলা সাহিত্যে উচ্চ আসনে আসীন হয়ে আছেন ফাদার মারিনো রিগন।