প্রতীক বরাদ্দেই উৎসবের আমেজ
সকাল নয়টা। যশোর সদর উপজেলার একাধিক রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় লোকে লোকারণ্য। প্রতীক নিতে হাজির হন প্রার্থীরা। সাথে আনেন বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী-সমর্থক। আগত সমর্থকদের চোখেমুখে ছিল খুশির ঝিলিক। কাক্সিক্ষত প্রতীক পেতে অনেকেই নির্বাচনের আগে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জড়ান। একই প্রতীক একাধিক প্রার্থী দাবি করায় বিপাকে পড়েন রিটার্নিং অফিসাররা। অগত্যা তারা লটারির আয়োজন করেন। লটারিতে যারা বিজয়ী হন তারা যেন রাজ্য জয় করে ফেলেন! আনন্দে আত্মহারা হন প্রার্থীসহ তাদের সমর্থকরা। বোঝাতে চান, প্রথম লড়াইতে বিজয়ী হয়েছেন, সামনেও হতে পারেন!
রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের সামনের চত্বরে বসে প্রতীক বিক্রির দোকান। অধিকাংশ প্রার্থী ওইসব দোকান থেকে ইচ্ছেমতো প্রতীক কিনে গলায় ঝোলান। সবমিলিয়ে এ এক অন্যরকম উৎসবমুখর পরিবেশ।
এদিকে, প্রতীক পেয়েই ভোটের মাঠে নেমে পড়েছেন যশোর সদর উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা। সোমবার উপজেলা পরিষদ, জেলা নির্বাচন অফিস ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে স্ব স্ব রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে প্রতীক নেন প্রার্থীরা। এ সময় উৎসব বিরাজ করে প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে।
সোমবার প্রতীক পেয়েই অধিকাংশ প্রার্থী পোস্টার ও লিফলেট ছেপে ফেলেছেন। প্রতিটি ইউনিয়নের মানুষের মধ্যে শুরু হয়েছে নির্বাচনী আমেজ। অনেক প্রার্থী শ’ শ’ নেতাকর্মী নিয়ে এলাকায় শোডাউন করেন। রাস্তাঘাট, দোকানপাট কিংবা গ্রামের ওলিগলিতে শুরু হয়েছে নির্বাচনী প্রচারণা। মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন এলাকা। ইউনিয়নে কে হতে পারেন আগামীর অভিভাবক-এ নিয়ে দোকানপাটে চায়ের কাপে চুমুকের সাথে সাথে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে চলছে আলাপ আলোচনা। পোস্টার ছাপাতে শহরের প্রেসগুলোতে শুরু হয়েছে ব্যস্ততা। আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে এই ১৫ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বার পদের নির্বাচন।
হৈবতপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী নৌকা প্রতীকের আবু সিদ্দিক, মোটরসাইকেলের হরেণ কুমার বিশ্বাস, হাতপাখার সোহরাব হোসেন ও আনারসের আহম্মদ আলী ভোটের মাঠে নেমেছেন।
লেবুতলায় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত আলীমুজ্জামান মিলনকে নির্বাচিত ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার। এর আগে শহিদুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। এরপর তিনি প্রার্থিতা ফিরে পেতে হাইকোর্টে আপিল করেছেন বলে জানা গেছে।
ইছালীতে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নৌকার ফেরদৌসি ইয়াসমিন, ঘোড়া প্রতীকের সিরাজুল ইসলাম, হাতপাখার আব্দুল কাদের, চশমার জাহিদুল ইসলাম, মোটরসাইকেলের আয়ুব হোসেন, আনারসের আজিজুর রহমান ও গোলাপ ফুলের সাইফুর রহমান।
নওয়াপাড়ায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নৌকার রাজিয়া সুলতানা, মোটরসাইকেলের হুমায়ুন কবীর তুহিন, আনারসের আলতাফ হোসেন, ঘোড়া কাজী আলমগীর হোসেন, হাতপাখার মোশারফ হোসেন ও চশমা প্রতীকের আসাদুল ইসলাম ঝন্টু।
উপশহর ইউনিয়নে নৌকার এহসানুর রহমান লিটু ও আনারস প্রতীকের শওকত হোসেন রত্নের মধ্যে লড়াই হবে।
কাশিমপুরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নৌকার শরিফুল ইসলাম, আনারসের মোস্তফা এনামুল বারী, মোটরসাইকেলের বিএম সাইফুল ও ঘোড়া প্রতীকের আইয়ুব হোসেন।
চুড়ামনকাটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নৌকার দাউদ হোসেন, আনারসের আব্দুল মান্নান মুন্না, হাতপাখার আব্বাস উদ্দিন বিশ্বাস, টেলিফোনের আলমগীর কবির, চশমার গোলাম মোস্তফা, গোলাপ ফুলের মতিয়ার রহমান, অটোরিকশার সাইফুল ইসলাম ও মোটরসাইকেল প্রতীকের মোহাম্মদ বাদশা।
দেয়াড়ায় ভোট যুদ্ধে নেমেছেন নৌকার লিয়াকত আলী, আনারসের আনিছুর রহমান, ঘোড়ার জিয়াউল হক, মোটরসাইকেলের মাসুদ রানা ও হাতপাখার আব্দুল্লাহ।
আরবপুরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নৌকার মীর আরশাদ আলী, আনারসের সামসুর রহমান, মোটরসাইকেলের খন্দকার ফারুক আহমেদ, টেবিল ফ্যানের কাজী কাসেম, ঘোড়ার নুরুল ইসলাম, হাতপাখার হাবিবুর রহমান, চশমার আসাদুজ্জামান ও গোলাপ ফুল প্রতীকের গাজী রফিকুল ইসলাম।
চাঁচড়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকার সেলিম রেজা পান্নু, আনারসের শামীম রেজা, হাতপাখার শামসুর রহমান ও মোটরসাইকেলের ফারুখ হোসেনের মধ্যে।
রামনগরে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে নেমেছেন নৌকার নাজনীন নাহার, চশমার আফজাল হোসেন, মোটরসাইকেলের মাহমুদ হাসান লাইফ, হাতপাখার আব্দুস সাত্তার, ঘোড়ার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, আনারসের এমদাদুল হক, অটোরিকশার জুলেখা বেগম ও টেলিফোন প্রতীকের মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
ফতেপুরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নৌকার শেখ সোহরাব হোসেন, টেবিল ফ্যানের রবিউল ইসলাম, ঘোড়ার ফাতেমা আনোয়ার, হাতপাখার ওসমান গণি, মোটরসাইকেলের আলমগীর হোসেন ও আনারস প্রতীকের শিল্পী খাতুন।
কচুয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নৌকার লুৎফর রহমান ধাবক, হাতপাখার বাবুল হুসাইন, মোটরসাইকেলের শেখ মাহমুদ হোসেন, চশমার আব্দুর রশিদ, অটোরিকশার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, ঘোড়ার কাজী হাফিজুর রহমান ও আনারসের হাফিজুর রহমান খান।
নরেন্দ্রপুরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকার মোদাচ্ছের আলী, আনারসের রাজু আহমেদ, হাতপাখার ওলিয়ার রহমান, মোটরসাইকেলের জাকির হোসেন ও ঘোড়া প্রতীকের হোসেন ফেরদৌস আলমের মধ্যে।
এবং বসুন্দিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নৌকার রিয়াজুল ইসলাম খান রাসেল, লাঙ্গলের তুহিন খান, আনারসের শেখ শাহাবুদ্দীন, মোটরসাইকেলের নুরুজ্জামান খান ও ঘোড়ার মমিনুল ইসলাম আমিনুল। আগামী ৫ জানুয়ারি সদর উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
Try Adsterra Earnings, it’s 100% Authentic to make money more and more.